Thursday, October 25, 2018

মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য করণীয়



মা-বাবার কবর যিয়ারত


ﺇﻥ ﺍﻟﺤﻤﺪ ﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﺼﻼﺓ ﻭﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻰ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻋﻠﻰ ﺁﻟﻪ ﻭﺻﺤﺒﻪ ﺃﺟﻤﻌﻴﻦ، ﺃﻣﺎ ﺑﻌﺪ :
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মৃত মা-বাবার জন্য কী ধরনের আমল করা যাবে এবং যে আমলের সওয়াব তাদের নিকট পৌছবে তা উল্লেখ করা হলো-----
(১).মা-বাবার জন্য বেশী বেশী দুআ করা,আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা  -
মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর সন্তান মা-বাবার জন্য বেশী বেশী দুআ করবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুআ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং কী দুআ করবো তাও শিক্ষা দিয়েছেন । কুরআনে এসেছে-
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا ﴿الإسراء: ٢٤﴾
‘‘
হে আমার রব, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন’’(বানী ইসরাঈল)।
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ ﴿ابراهيم: ٤١﴾
‘‘
হে আমাদের রব, রোজ কিয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করে দিন’’(ইবরাহীম)
এছাড়া আল্লাহ রাববুল আলামীন পিতা-মাতার জন্য দূআ করার বিশেষ নিয়ম শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেনঃ-
رَّبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَلَا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلَّا تَبَارًا ﴿نوح: ٢٨﴾
হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি যালিমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না(নুহ)
হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - أَنَّ رَسُولَ اَللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ  إِذَا مَاتَ اَلْإِنْسَانُ اِنْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ : صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالَحٍ يَدْعُو لَهُ  رَوَاهُ مُسْلِم
অর্থ: আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩ টি আমল বন্ধ হয় না-১. সদকায়ে জারিয়া ২. এমন জ্ঞান-যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় ৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দুআ করে (মুসলিম)
মা-বাবার জন্য আল্লাহর নিকট বেশী বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করা গুরুত্বপূর্ণ আমল। হাদীসে এসেছে-
عن أبى هريرة قال ترفع للميت بعد موته درجته فيقول أي رب أي شيء هذه فيقال ولدك استغفر لك قال الشيخ الألباني : حسن
অর্থ: আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মৃত্যুর পর কোন বান্দাহর মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তখন সে বলে হে আমার রব, আমি তো এতো মর্যাদার আমল করিনি, কীভাবে এ আমল আসলো ? তখন বলা হবে, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায় এ মর্যাদা তুমি পেয়েছো’’ (আদাবুল মুফরাদ)অপর হাদীসে এসেছে-
عَنْ عُثْمَانَ ، قَالَ : وَقَفَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَبْرِ رَجُلٍ وَهُوَ يُدْفَنُ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهُ قَالَ : اسْتَغْفِرُوا لأَخِيكُمْ وَسَلُوا اللَّهَ لَهُ الثَّبَاتَ فَإِنَّهُ يُسْأَلُ الآنَ.
অর্থ: উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার কবরের পার্শ্বে দাঁড়ালেন এবং বললেন ‘‘তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তার জন্য ঈমানের উপর অবিচলতা ও দৃঢ়তা কামনা কর, কেননা এখনই তাকে প্রশ্ন করা হবে’’ (মুসনাদুল বাজ্জার)
(২). ঋণ পরিশোধ করা-
মা-বাবার কোন ঋণ থাকলে তা দ্রুত পরিশোধ করা সন্তানদের উপর বিশেষভাবে কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঋণ পরিশোধ করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - عَنِ اَلنَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: نَفْسُ اَلْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ, حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ رَوَاهُ أَحْمَدُ, وَاَلتِّرْمِذِيُّ وَحَسَّنَهُ
অর্থ: রসুলুল্লাহ সঃ বলেছেন‘‘মুমিন ব্যক্তির আত্মা তার ঋণের সাথে সম্পৃক্ত থেকে যায়; যতক্ষণ তা তার পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হয়”(আহমাদ,তিরমিযী,ইবন মাজাহ)
ঋণ পরিশোধ না করার কারণে জান্নাতের যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়; এমনকি যদি আল্লাহর রাস্তায় শহীদও হয় । হাদীসে আরো এসেছে-
قَالَ مُحَمَّدٌ فَسَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا التَّشْدِيدُ الَّذِي نَزَلَ قَالَ فِي الدَّيْنِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ رَجُلًا قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ عَاشَ ثُمَّ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ عَاشَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ مَا دَخَلَ الْجَنَّةَ حَتَّى يَقْضِيَ دَيْنَهُ رواه احمد والنسايئ و الحاكم
অর্থ: যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দার ঋণ পরিশোধ না করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না (আহমাদ,নাসায়ী,মুস্তাদরাকে হাকি)
(৩). মা-বাবার ওসিয়ত পূর্ণ করা-
মা-বাবা শরীয়াহসম্মত কোন ওসিয়ত করে গেলে তা পূর্ণ করা সন্তানদের উপর দায়িত্ব।
عن الشريد بن سويد الثقفي قال قلت  يا رسول الله إن أمي أوصت أن نعتق عنها رقبة وعندي جارية سوداء قال : ( ادع بها ) فجاءت فقال : ( من ربك ؟ ) قالت : الله قال : ( من أنا ؟ ) قالت : رسول الله قال : ( أعتقها فإنها مؤمنة ) رواه ابن حبان و قال إسناده حسن
 অর্থ: রাশীদ ইবন সুয়াইদ আসসাকাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম হে আল্লাহর রাসুল, আমার মা একজন দাসমুক্ত করার জন্য ওসিয়ত করে গেছেন। আর আমার নিকট কালো একজন দাসী আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে ডাকো, সে আসল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে প্রশ্ন করলেন, তোমার রব কে ? উত্তরে সে বলল, আমার রব আল্লাহ। আবার প্রশ্ন করলেন আমি কে ? উত্তরে সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসুল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে মুক্ত করে দাও; কেন না সে মুমিনা )সহীহ ইবন হিববান(
)). কাফফারা আদায় করা-
মা-বাবার জিম্মায় কোন কোন কাফফারা বাকী থাকলে সন্তান তা পূরণ করবে। কুরআনে এসেছে-
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ أَن يَقْتُلَ مُؤْمِنًا إِلَّا خَطَأً وَمَن قَتَلَ مُؤْمِنًا خَطَأً فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ وَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰ أَهْلِهِ إِلَّا أَن يَصَّدَّقُوا فَإِن كَانَ مِن قَوْمٍ عَدُوٍّ لَّكُمْ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ وَإِن كَانَ مِن قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَاقٌ فَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰ أَهْلِهِ وَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ تَوْبَةً مِّنَ اللَّهِ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا ﴿النساء: ٩٢﴾
অর্থ: যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে এবং দিয়াত (রক্ত পণ দিতে হবে) যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিজনদের কাছে। তবে তারা যদি সদাকা (ক্ষমা) করে দেয় (তাহলে সেটা ভিন্ন কথা)(সূরা আন-নিসা:৯২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
عن أَبي هريرة - رضي الله عنه - : أنَّ رسولَ اللهِ - صلى الله عليه وسلم - ، قَالَ  مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمينٍ ، فَرَأى غَيْرَهَا خَيْراً مِنْهَا ، فَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ ، وَلْيَفْعَلِ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ  رواه مسلم .
অর্থ: ‘‘আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু রসুল থেকে বর্ণনা করেন,  যে ব্যক্তি কসম খেয়ে শপথ করার পর তার থেকে উত্তম কিছু করলেও তার কাফফারা অদায় করবে’’(মুসলিম)
(৫). মা-বাবার পক্ষ থেকে মান্নত আদায় করা-
মা-বাবা কোন মান্নত করে গেলে সন্তান তার পক্ষ থেকে পূরণ করবে।  হাদীসে এসেছে-
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ : أَنَّ امْرَأَةً نَذَرَتْ أَنْ تَصُومَ شَهْرًا فَمَاتَتْ فَأَتَى أَخُوهَا النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- فَقَالَ  صُمْ عَنْهَا رواه البيهقي. عن عبيد الله بن عبد الله أنه سأل ابن عباس عن نذر كان على أمه من اعتكاف وماتت قال : صم عنها واعتكف عنها
অর্থ:ইবন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, কোন মহিলা রোজা রাখার মান্নত করেছিল, কিন্তু সে তা পূরণ করার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করল। এরপর তার ভাই এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলে তিনি বললে, তার পক্ষ থেকে সিয়াম পালন কর) বায়হাকী)
মা-বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় যদি তাদের কোন মানতের সিয়াম কাযা থাকে, সন্তান তাদের পক্ষ থেকে সিয়াম পালন করলে তাদের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত হাদীসে আসছে-
عَن عَائِشَة رَضِيَ اللَّهُ عَنْها ، أَن رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم َ  قَالَ : " من مَاتَ وَعَلِيهِ صِيَام صَامَ عَنهُ وليه  مُتَّفق عَلَيْهِ . (وَاللَّفْظ للْبُخَارِيّ)
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-‘‘যে ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করল এমতাবস্থায় যে তার উপর রোজা ওয়াজিব ছিল। তবে তার পক্ষ থেকে তার ওয়ারিসগণ রোজা রাখবে’’(বুখারী:মুসলীম)অধিকাংশ আলেমগণ এ হাদীসটি শুধুমাত্র ওয়াজিব রোযা বা মানতের রোযার বিধান হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।অপর হাদিসে আসছে-
عَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اَللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ اِمْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ جَاءَتْ إِلَى اَلنَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم  فَقَالَتْ: إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ, فَلَمْ تَحُجَّ حَتَّى مَاتَتْ, أَفَأَحُجُّ عَنْهَا? قَالَ: " نَعَمْ ", حُجِّي عَنْهَا, أَرَأَيْتِ لَوْ  كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ, أَكُنْتِ قَاضِيَتَهُ? اِقْضُوا اَللَّهَ, فَاَللَّهُ أَحَقُّ بِالْوَفَاءِ  رَوَاهُ اَلْبُخَارِيُّ
 
অর্থ: ‘‘ জুহাইনা গোত্রের একজন মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আগমণ করে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার মা হজ্জ করার মানত করেছিলেন কিন্তু তিনি হজ্জ সম্পাদন না করেই মারা গেছেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করতে পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তুমি তোমার মায়ের পক্ষ থেকে হজ্জ কর। তোমার কি ধারণা যদি তোমার মার উপর ঋণ থাকতো তবে কি তুমি তা পরিশোধ করতে না ? সুতরাং আল্লাহর জন্য তা আদায় কর। কেননা আল্লাহর দাবী পরিশোধ করার অধিক উপযোগী’’(বোখারী)
(). দান-ছাদকাহ করা-
হাদীসে এসেছে
عَنْ عَائِشَةَ -رَضِيَ اَللَّهُ عَنْهَا-  أَنَّ رَجُلاً أَتَى اَلنَّبِيَّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: يَا رَسُولَ اَللَّهِ لِلَّهِ إِنَّ أُمِّي اُفْتُلِتَتْ نَفْسُهَا وَلَمْ تُوصِ , وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ , أَفَلَهَا أَجْرٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ عَنْهَا ? قَالَ : " نَعَمْ  مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ , وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ
অর্থ: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেনঃ ‘‘জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল আমার মা হঠাৎ মৃতু বরণ করেছেন। তাই কোন অছিয়ত করতে পারেন নি। আমার ধারণা তিনি যদি কথা বলার সুযোগ পেতেন তাহলে দান-ছাদকা করতেন। আমি তাঁর পক্ষ থেকে ছাদকা করলে তিনি কি এর ছাওয়াব পাবেন ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ, অবশ্যই পাবেন” (বোখারী,মুসলীম)
তবে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে সাদাকায়ে জারিয়া (প্রবাহমান ও চলমান সাদাকা)যেমন পানির কুপ খনন করা, নলকুপ বসানো, কুরআন শিক্ষার জন্য মক্তব ও দ্বীনী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী জনকল্যাণমূলক কাজ করা।
(৭). মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করা-
মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তার ছাওয়াব দ্বারা তারা উপকৃত হবে। এ বিষয়ে হাদীসে এসেছে-
عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِكَبْشٍ أَقْرَنَ يَطَأُ فِي سَوَادٍ وَيَنْظُرُ فِي سَوَادٍ وَيَبْرُكُ فِي سَوَادٍ فَأُتِيَ بِهِ لِيُضَحِّيَ بِهِ ثُمَّ قَالَ يَا عَائِشَةُ هَلُمِّي الْمُدْيَةَ ثُمَّ قَالَ اسْتَحِدِّيهَا بِحَجَرٍ فَفَعَلَتْ ثُمَّ أَخَذَهَا وَأَخَذَ الْكَبْشَ فَأَضْجَعَهُ ثُمَّ ذَبَحَهُ وَقَالَ بِسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ ثُمَّ ضَحَّى بِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رواه مسلم
অর্থ: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি শিংযুক্ত দুম্বা উপস্থিত করতে নির্দেশ দিলেন, যার পা কালো, চোখের চতুর্দিক কালো এবং পেট কালো। অতঃপর তা কুরবানীর জন্য আনা হলো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বললেন, হে আয়েশা! ছুরি নিয়ে আস, তারপর বললেন, তুমি একটি পাথর নিয়ে তা দ্বারা এটাকে ধারালো কর। তিনি তাই করলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছুরি হাতে নিয়ে দুম্বাটিকে শুইয়ে দিলেন। পশুটি যবেহ্ করার সময় বললেন, বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ তুমি এটি মুহাম্মাদ, তাঁর বংশধর এবং সকল উম্মাতে মুহাম্মাদীর পক্ষ থেকে কবুল করএভাবে তিনি তা দ্বারা কুরবানী করলেন(মুসলিম)
৮. মা-বাবার আত্নীয়দের সাথে সম্পর্ক রাখা
সন্তান তার মা-বাবার আত্নীয়দের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
عن أبي بردة قال : قدمت المدينة فأتاني عبد الله بن عمر فقال : أتدري لم أتيتك ؟ قال : قلت : لا قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول من أحب أن يصل أباه في قبره فليصل إخوان أبيه بعده  وإنه كان بين أبي عمر وبين أبيك إخاء وود فأحببت أن أصل ذاك رواه ابن حبان و قال إسناده صحيح على شرط البخاري
যে ব্যক্তি তার পিতার সাথে কবরে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ভালবাসে, সে যেন পিতার মৃত্যুর পর তার ভাইদের সাথে সু-সম্পর্ক রাখে(সহীহ ইবন হিববান)
(). মা-বাবার বন্ধুদের সম্মান করা-
মা-বাবার বন্ধুদের সাথে ভাল ব্যবহার করা, সম্মান করা, তাদেরকে দেখতে যাওয়া,তাদেরকে হাদিয়া দেয়া। এ বিষয়ে হাদীসে উল্লেখ আছে-
عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما : أنَّ رَجُلاً مِنَ الأعْرَابِ لَقِيَهُ بطَريق مَكَّةَ ، فَسَلَّمَ عَلَيهِ عبدُ الله بْنُ عُمَرَ ، وَحَمَلَهُ عَلَى حِمَارٍ كَانَ يَرْكَبُهُ ، وَأعْطَاهُ عِمَامَةً كَانَتْ عَلَى رَأسِهِ ، قَالَ ابنُ دِينَار : فَقُلْنَا لَهُ : أصْلَحَكَ الله ، إنَّهُمُ الأعرَابُ وَهُمْ يَرْضَوْنَ باليَسير ، فَقَالَ عبد الله بن عمر : إن أَبَا هَذَا كَانَ وُدّاً لِعُمَرَ بنِ الخطاب - رضي الله عنه - ، وإنِّي سَمِعتُ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - ، يقول : (( إنَّ أبرَّ البِرِّ صِلَةُ الرَّجُلِ أهْلَ وُدِّ أبِيهِ بَعْدَ أنْ يُولِّيَ  وَإنَّ أبَاهُ كَانَ صَديقاً لعُمَرَ - رضي الله عنه - رَوَى هذِهِ الرواياتِ كُلَّهَا مسلم.
অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রাদিয়াল্লাহু আনহু আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, একবার মক্কার পথে চলার সময় আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু এর এক বেদুঈন এর সাথে দেখা হলে তিনি তাকে সালাম দিলেন এবং তাকে সে গাধায় চড়ালেন যে গাধায় আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা উপবিষ্ট ছিলেন এবং তাঁর (আব্দুল্লাহ) মাথায় যে পাগড়িটি পরা ছিলো তা তাকে প্রদান করলেন। আব্দুল্লাহ ইবান দীনার রাহেমাহুল্লাহ বললেন, তখন আমরা আব্দুল্লাহকে বললাম: আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক! এরা গ্রাম্য মানুষ: সামান্য কিছু পেলেই এরা সন্তুষ্ট হয়ে যায়-(এতসব করার কি প্রয়োজন ছিলো?) উত্তরে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তার পিতা, (আমার পিতা) উমার ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বন্ধু ছিলেন। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি পুত্রের জন্য পিতার বন্ধু-বান্ধবের সাথে ভাল ব্যবহার করা সবচেয়ে বড় সওয়াবেরকাজ’’(মুসলীম)
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে-
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى نِسَاءِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- إِلاَّ عَلَى خَدِيجَةَ وَإِنِّى لَمْ أُدْرِكْهَا. قَالَتْ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا ذَبَحَ الشَّاةَ فَيَقُولُ أَرْسِلُوا بِهَا إِلَى أَصْدِقَاءِ خَدِيجَةَ رواه مسلم »
«
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই কোন বকরী যবেহ করতেন, তখনই তিনি বলতেন, এর কিছু অংশ খাদীজার বান্ধবীদের নিকট পাঠিয়ে দাও (মুসলীম)।. মা-বাবার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করাঃ

তাই সুন্নাত হচ্ছে, মৃত ব্যক্তিকে কবরে দেয়ার পর তার কবরের পার্শ্বে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তার জন্য প্রশ্নোত্তর সহজ করে দেয়া, প্রশ্নোত্তর দিতে সমর্থ হওয়ার জন্য দোআ করা।
(১০). মা-বাবার ভাল কাজসমূহ জারী রাখা-
মা-বাবা যেসব ভাল কাজ অর্থাৎ মসজিদ তৈরী করা, মাদরাসা তৈরী করা, দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরীসহ যে কাজগুলো শুরু করে গিয়েছেন সন্তান হিসাবে তা যাতে অব্যাহত থাকে তার ব্যবস্থা করা। কেননা এসব ভাল কাজের সওয়াব তাদের আমলনামায় যুক্ত হতে থাকে। হাদীসে এসেছে-
عن أَبي مسعود عُقبةَ بنِ عمرو الأنصاري البدري  ، قَالَ : قَالَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - : (( مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أجْرِ فَاعِلِهِ )) رواه مسلم .
‘‘
ভাল কাজের পথপ্রদর্শনকারী এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সাওয়াব পাবে’’(মুসলীম,আবু দাউদ,তিরমিযী)
قَالَ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - : « مَنْ سَنَّ في الإسلامِ سنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أجْرُهَا ، وَأجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدَهُ ، مِنْ غَيرِ أنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورهمْ شَيءٌ ، وَمَنْ سَنَّ في الإسْلامِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيهِ وِزْرُهَا ، وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ ، مِنْ غَيرِ أنْ يَنْقُصَ مِنْ أوْزَارِهمْ شَيءٌ » . رواه مسلم .
যে ব্যক্তির ইসলামের ভাল কাজ শুরু করল, সে এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সাওয়াব পাবে। অথচ তাদেও সওয়াব থেকে কোন কমতি হবে না’’ (মুসলীম)
(১১). কবর যিয়ারত করা-
সন্তান তার মা-বাবার কবর যিয়ারত করবে। এর মাধ্যমে সন্তান এবং মা-বাবা উভয়ই উপকৃত হবে।হাদীসে এসেছে-
عن بُرَيْدَة - رضي الله عنه - ، قَالَ : قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - : (( كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عن زِيَارَةِ القُبُورِ فَزُوروها )) رواه مسلم . وعن ابن مسعود أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : " كنت نهيتكم عن زيارة القبور فزوروها فإنها تزهد في الدنيا وتذكر الآخرة " . رواه ابن ماجه
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ,আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা কবর যিয়রাত কর, কেননা তা দুনিয়ার মহাব্বত কমায়, আখেরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়(মুসলীম,ইবনে মাযা)।
(১২). ওয়াদা করে গেলে তা বাস্তবায়ন করা-
মা-বাবা কারো সাথে কোন ভাল কাজের ওয়াদা করে গেলে বা এমন ওয়াদা যা তারা বেচে থাকলে করে যেতেন, সন্তান যথাসম্ভব তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে-
وَلَا تَقْرَبُوا مَالَ الْيَتِيمِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ حَتَّىٰ يَبْلُغَ أَشُدَّهُ وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا ﴿الإسراء: ٣٤﴾
অর্থ: আর তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে(সূরা বনী ইসরাঈল)
(১৩). কোন গুনাহের কাজ করে গেলে তা বন্ধ করা-
মা-বাবা বেচে থাকতে কোন গুনাহের কাজের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে/গুনাহের কাজ চালুকরে থাকলে তা বন্ধ করবে বা শরীয়াহ সম্মতভাবে সংশোধন করে দিবে।হাদীসে এসেছে-
 وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - : أنَّ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم - ، قَالَ : (( مَنْ دَعَا إِلَى هُدَىً ، كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ مِثْلُ أجُورِ مَنْ تَبِعَه ، لاَ يَنْقُصُ ذلِكَ مِنْ أجُورِهمْ شَيئاً ، وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلاَلَةٍ ، كَانَ عَلَيهِ مِنَ الإثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ ، لاَ يَنْقُصُ ذلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيئاً )) رواه مسلم .
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
 যে মানুষকে গুনাহের দিকে আহবান করবে, এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ গুনাহ তার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে। অথচ তাদের গুনাহ থেকে কোন কমতি হবে না’’ (সহীহ মুসলিম)
(১৪). মা-বাবার পক্ষ থেকে মাফ চাওয়া-
মা-বাবা বেচে থাকতে কারো সাথে খারাপ আচরণ করে থাকলে বা কারো উপর যুলুম করে থাকলে বা কাওকে কষ্ট দিয়ে থাকলে মা-বাবার পক্ষ থেকে তার কাছ থেকে মাফ মাফ চেয়ে নিবে অথবা ক্ষতি পূরণ দিয়ে দিবে।  হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ  أَتَدْرُونَ مَنِ الْمُفْلِسُ  قَالُوا : الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لاَ دِرْهَمَ لَهُ وَلاَ مَتَاعَ فَقَالَ : إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِى يَأْتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلاَةٍ وَصِيَامٍ وَزَكَاةٍ وَيَأْتِى قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا وأَكَلَ مَالَ هَذَا وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْضَى مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِى النَّارِ  لَفْظُ حَدِيثِهِمَا سَوَاءٌ إِلاَّ أَنَّ فِى رِوَايَةِ ابْنِ عَبْدَانَ :« فَيُقْضَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ  رَوَاهُ مُسْلِمٌ
 
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি জান নিঃস্ব ব্যক্তি কে? সাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার সম্পদ নাই সে হলো গরীব লোক। তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সে হলো গরীব যে, কিয়ামতের দিন নামায, রোযা ও যাকাত নিয়ে আসবে অথচ সে অমুককে গালি দিয়েছে, অমুককে অপবাদ দিয়েছে, অন্যায়ভাবে লোকের মাল খেয়েছে, সে লোকের রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে। কাজেই এসব নির্যাতিত ব্যক্তিদেরকে সেদিন তার নেক আমল নামা দিয়ে দেয়া হবে। এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে (মুসলীম)
সুতরাং এ ধরনের নিঃস্ব পিতা-মাতাকে মুক্ত করার জন্য তার হকদারদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়া সন্তানের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
মুফতি আব্দুল্লাহ খান ফয়েজী
সহঃঅধ্যাপক সানন্দবাড়ী সিঃমাদ্রাসা
খতিব-সালুইচগেট জামে মসজিদ,রাজিবপুর
ইমাম- মহীলা মাদ্রাসা মসজিদ,রাজিবপুর
০১৭২৫১৮৩২৪৫

প্রচলিত মুনাজাত ও তার হুকুম

ভারত উপমহাদেশে বিভিন্ন মসজিদে বেশ কিছুদিন থেকে ফরজ সালাতের পর সম্মিলিত মুনাজাত চালু হয়ে আসছে । ফরজ সালাতের সালাম ফিরানো...